বান্দরবানে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি বর্ণাঢ্যও র‍‍্যালি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি

প্রকাশিত: ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিয়ে দিবসটি পালন করেছেন বান্দরবান জেলা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ও পৌর জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল বিএনপি এবার রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি অংশ গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বান্দরবান রাজার মাঠ থেকে বিশাল বর্ণাঢ্য র‍‍্যালিও গণজমাতের আয়োজন করা হয়!উক্ত র‍‍্যালি গনজমায়েতের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সাংসদ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সা চিং প্রু মার্মা(জেরি),উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যপক ওসমান গণি!এতে জেলা স্বেছাসেবক দল আহবায়ক আলি হায়দার বাবলু ও বান্দরবান পৌর স্বেছাসেবক দল আহবায়ক আশরাফুল নেতৃত্বে স্বেছাসেবক দলের নেতা কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিত লক্ষ করা যায়!উল্লেখ্য যে,আজকের দিবসটি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বান্দরবান জেলার জাতীয়বাদী দল বিএনপিরসহ সেচ্ছাসেবক বিএনপি দলও নানান বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা, আরও বিএনপির শক্তিশালী দলের মোঃ আলমগীরসহ
বান্দরবান সুয়ালক ইউনিয়ন ইউপি সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন,বান্দরবান জেলার জাতীয়তাবাদী দল কন্ট্রাক্টর মোঃ আজম খানসহ অরও অনন্য দলের কর্মীরা! আজকের দিবসটি উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেযারম্যান তারেক রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর থেকে থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। 
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যম-িত। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লবে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। আর সেজন্যই জাতীয় জীবনে এই বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দলের যৌথসভা করে ৩১ অক্টোবর ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মসূচি ঘোষণাকালে ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস ঘোষণা এবং ওই দিন সরকারি ছুটি পুনর্বহালের দাবি জানান। তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য ৭ নভেম্বর গুরুত্বপূর্ণ দিন। বর্তমান প্রজন্মকে এ দিনের ইতিহাস থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। তাই ব্যাপকভাবে এই দিনের ইতিহাস ও গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে বিএনপি ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নেয়।

দিবসটি পালন উপলক্ষে বিএনপির ১০ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৬ নভেম্বর বুধবার ঢাকায় বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৭ নভেম্বর সকাল ৬টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের সব জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ ছাড়াও ৭ নভেম্বর উপলক্ষে ডকুমেন্টরি (ভিডিও, স্থিরচিত্র) ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং ফেসবুক, ইউটিউব ও অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে।

পোস্টার এবং ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করা হয়েছে। ৮ নভেম্বর সারাদেশে  র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। সকল বিভাগীয় শহরগুলোতে র‌্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয় বিকেলে। এছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলো বিভিন্ন দিন আলাদাভাবে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে!

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বুধবার বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয জীবনের এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অভূতপূর্ব অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।

স্বাধীনতাত্তোর রাষ্ট্রীয় অনাচার, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, তৎকালীন ক্ষমতাসীন মহল নিজ স্বার্থে জাতীয় স্বাধীনতাকে বিপন্ন ও সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে আধিপত্যবাদের থাবার মধ্যে দেশকে ঠেলে দেয়। শুধুমাত্র নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই গণতন্ত্রবিনাশী কর্মকা- শুরু করে। সেইজন্য মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যার মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। শুরু হয় নির্মম একদলীয় দুঃশাসন। দেশে নেমে আসে অশান্তি ও হতাশার কালো ছায়া। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত অধিকারগুলোকে হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সংকটকালে ৭৫-এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে।

এই অরাজক পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির সম্মিলন ঘটে এবং জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী সত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। 
তারেক রহমান বলেন, আধিপত্যবাদী শক্তির এদেশীয় অনুচররা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নির্মমভাবে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনো ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
তারেক রহমান বলেন, আবারও বিদেশি শক্তির দোসর আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর রাষ্ট্রক্ষমতাকে জোর করে আঁকড়ে ছিল। এদের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। গোপন চুক্তি সম্পাদন করে আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রভুত্ব কায়েমের বেপরোয়া কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছিল। তারা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদের বিভৎস নির্মমতায় দমন করেছে।

আয়নাঘরসহ গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার এক ভয়াল দুঃশাসন কায়েম করে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে নির্দয় শাসনের যাঁতাকলে পৈশাচিকভাবে পিষ্ট করেছে। আর নির্যাতনের এই অব্যাহত ধারায় গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বহু বছর মুক্তি দেওয়া হয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার মহিমান্বিত আত্মদানের মধ্য দিয়ে তারা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। মানুষের মধ্যে গণতন্ত্রের মুক্তির পথ প্রসারিত হয়েছে। 
তারেক রহমান বলেন, এখন চূড়ান্ত গণতন্ত্রের চর্চার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনসহ গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগের নতজানু নীতির কারণেই আমাদের আবহমানকালের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর  চলেছিল বাধাহীন আগ্রাসন। তাই আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং  জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াত আমিরের: যথাযোগ্য মর্যাদায় ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবিলায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকল মুক্তিকামী জনতা রাজপথে নেমেছিলেন। আমাদের দেশপ্রেমিক সিপাহী ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ৭ নভেম্বর ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজত করেছিলেন।  
বান্দরবান জাতীয়তাবাদী দল সাবেক মন্ত্রী রাজপুত্র সা চিং প্রু মার্মা বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনী বারবার দেশকে বিদেশি আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছে। 
৫ আগস্ট দেশের ছাত্র-জনতা অনেক তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময় দেশকে সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের কবল থেকে মুক্ত করেছে এবং দেশের সামরিক বাহিনী ছাত্র-জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এমন এক সময় ৭ নভেম্বর পালন করতে যাচ্ছি যখন জাতি নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জাতিকে আবার ফ্যাসিবাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নানামুখী চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তারা ফিরে এলে জাতি এক মহাসংকটে পড়বে। এ অবস্থায় জাতিকে রক্ষা করার জন্য দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল-মত-নির্বিশেষে এবং বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে!
আজ ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করেছে বান্দরবান জেলা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, এবার রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বান্দরবান রাজার মাঠ থেকে শুরু করে বান্দরবান প্রধান সড়ক ভবন প্রাঙ্গনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। দিবসটি উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেযারম্যান তারেক রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। 
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যম-িত। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লবে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। আর সেজন্যই জাতীয় জীবনে এই বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দলের যৌথসভা করে ৩১ অক্টোবর ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মসূচি ঘোষণাকালে ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস ঘোষণা এবং ওই দিন সরকারি ছুটি পুনর্বহালের দাবি জানান। তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য ৭ নভেম্বর গুরুত্বপূর্ণ দিন। বর্তমান প্রজন্মকে এ দিনের ইতিহাস থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। তাই ব্যাপকভাবে এই দিনের ইতিহাস ও গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে বিএনপি ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নেয়।
দিবসটি পালন উপলক্ষে বিএনপির ১০ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৬ নভেম্বর বুধবার ঢাকায় বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৭ নভেম্বর সকাল ৬টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের সব জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ ছাড়াও ৭ নভেম্বর উপলক্ষে ডকুমেন্টরি (ভিডিও, স্থিরচিত্র) ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং ফেসবুক, ইউটিউব ও অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে।

পোস্টার এবং ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করা হয়েছে। ৮ নভেম্বর সারাদেশে  র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। সকল বিভাগীয় শহরগুলোতে র‌্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে বিকেল ৩টায়। এছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলো বিভিন্ন দিন আলাদাভাবে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে!
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বুধবার বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয জীবনের এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অভূতপূর্ব অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।

স্বাধীনতাত্তোর রাষ্ট্রীয় অনাচার, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, তৎকালীন ক্ষমতাসীন মহল নিজ স্বার্থে জাতীয় স্বাধীনতাকে বিপন্ন ও সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে আধিপত্যবাদের থাবার মধ্যে দেশকে ঠেলে দেয়। শুধুমাত্র নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই গণতন্ত্রবিনাশী কর্মকা- শুরু করে। সেইজন্য মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যার মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। শুরু হয় নির্মম একদলীয় দুঃশাসন। দেশে নেমে আসে অশান্তি ও হতাশার কালো ছায়া। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত অধিকারগুলোকে হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সংকটকালে ৭৫-এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে।

এই অরাজক পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির সম্মিলন ঘটে এবং জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী সত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। 
তারেক রহমান বলেন, আধিপত্যবাদী শক্তির এদেশীয় অনুচররা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নির্মমভাবে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনো ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
এসময়ে বক্তারা বলেন, আবারও বিদেশি শক্তির দোসর আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর রাষ্ট্রক্ষমতাকে জোর করে আঁকড়ে ছিল। এদের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। গোপন চুক্তি সম্পাদন করে আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রভুত্ব কায়েমের বেপরোয়া কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছিল। তারা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদের বিভৎস নির্মমতায় দমন করেছে।

আয়নাঘরসহ গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার এক ভয়াল দুঃশাসন কায়েম করে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে নির্দয় শাসনের যাঁতাকলে পৈশাচিকভাবে পিষ্ট করেছে। আর নির্যাতনের এই অব্যাহত ধারায় গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বহু বছর মুক্তি দেওয়া হয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার মহিমান্বিত আত্মদানের মধ্য দিয়ে তারা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। মানুষের মধ্যে গণতন্ত্রের মুক্তির পথ প্রসারিত হয়েছে। 
এদিকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক বিএনপির দলে সহ-সাধারণ সম্পাদক আরাফুর রহমান বলেন, এখন চূড়ান্ত গণতন্ত্রের চর্চার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনসহ গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগের নতজানু নীতির কারণেই আমাদের আবহমানকালের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর  চলেছিল বাধাহীন আগ্রাসন। তাই আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং  জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াত আমিরের: যথাযোগ্য মর্যাদায় ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবিলায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকল মুক্তিকামী জনতা রাজপথে নেমেছিলেন। এসময় উপস্থিত বক্তারা বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনী বারবার দেশকে বিদেশি আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছে। 

৫ আগস্ট দেশের ছাত্র-জনতা অনেক তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময় দেশকে সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের কবল থেকে মুক্ত করেছে এবং দেশের সামরিক বাহিনী ছাত্র-জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তারা বলেন, আমরা এমন এক সময় ৭ নভেম্বর পালন করতে যাচ্ছি যখন জাতি নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জাতিকে আবার ফ্যাসিবাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নানামুখী চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তারা ফিরে এলে জাতি এক মহাসংকটে পড়বে। এ অবস্থায় জাতিকে রক্ষা করার জন্য দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল-মত-নির্বিশেষে এবং বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির দলেরা!